Facebook Twitter LinkedIn google plusone

09 সুইজারল্যান্ড

সুইজারল্যান্ড

সুইজারল্যান্ড ১২৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ওয়েস্টার্ন ইউরোপের মাঝের দিকে অবস্থিত। তাদের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির বেশীরভাগ জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ইতালি এবং ফ্রান্সের সাথে জড়িত।

ইউরোপের মধ্যবর্তী এলাকায় থাকা সত্ত্বেও, সুইজারল্যান্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অংশ নয়। ১৯৯০ এর দিকে সুইজারল্যান্ড এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে চুক্তির কথা ছিল, কিন্তু সুইস পাবলিক ইউ এর অংশ হবার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। তখন থেকে সুইজারল্যান্ড তাদের ইকোনোমিক সার্বভৌমত্ব বজায় রেখেছে।

সুইজারল্যান্ডকে ছোট দেশ হিসেবে গননা করা হয়, কিন্তু একটা কথা জেনে রাখেন যে তারা বস্তাবন্দী! তাদের জনসংখ্যা ৭.৭৮ মিলিয়ন, যা প্রতি স্কয়ার মাইলে ৪৭৭ জন বসবাস করে।

সুইজারল্যান্ড তাদের নিরপেক্ষতার জন্য জনপ্রিয় কারন তারা ২টা বিশ্বযুদ্ধের কোনটায়ই অংশগ্রহন করেনি।

সুইজারল্যান্ডঃ ফ্যাক্টস, ফিগারস, এবং ফিচারস

প্রতিবেশী: জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রিয়া
আয়তন: ১৫,৯৪০ বর্গ মাইল
জনসংখ্যা: ৭,৯৫২,৬০০
ঘনত্ব: ৪৭৭.৪ জন প্রতি বর্গমাইলে
রাজধানী শহর: বার্ন
সুইস কনফেডারেশন সভাপতি: Eveline Widmer-Schlumpf
মুদ্রা: সুইস ফ্রাঙ্ক (CHF)
মুখ্য আমদানি: যন্ত্রপাতি ও পরিবহনের উপকরণ, ঔষধি এবং ফার্মাসিউটিকাল পণ্য, অন্যান্য রাসায়নিক, শিল্পজাত পণ্য
প্রধান রপ্তানি: কেমিক্যালস, ঘড়ি, খাদ্য, যন্ত্র, গয়না, যন্ত্রপাতি, ওষুধপত্র, মূল্যবান ধাতু, বস্ত্র, রোলেক্স, Roger Federer
আমদানি পার্টনার: জার্মানি (২৭.৭%), ইউএস (১০.৬%), ইতালি (১০.৩%), ফ্রান্স (৮.৪%), রাশিয়া (৪.৪%), গ্রেট ব্রিটেন (৪%)
রপ্তানি পার্টনার: জার্মানি (২১.২%), ইউএস (৮.৭%), ফ্রান্স (৮.২%), ইতালি (৭.৯%), অস্ট্রিয়া (৪.৫%)
টাইম জোন: জিএমটি + 1 টি
ওয়েবসাইট: http://www.switzerland.com/en.cfm/home





ইকোনোমিক ওভারভিউ

মাথাপিছু আয়ের (মোট জিডিপি ভাগ দেশের জনসংখ্যা) দিক দিয়ে সুইজারল্যান্ড সেরা ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটি।
২০১০ সালে তাদের মোট আউটপুট ছিল $৫২৯.৯ বিলিয়ন। ছোট দেখালেও, জন প্রতি ভিত্তিতে তাদের জিডিপি $৪৬,৮১৫ যেটা বিশ্বে সর্বোচ্চ সেরাদের মধ্যে সপ্তম।
তাদের মুখ্য ট্রেডিং পার্টনার হল জার্মানি, ইউএস, ইতালি, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, এবং ইউকে। জাপানের মত সুইজারল্যান্ডও রপ্তানিনির্ভর দেশ। তাদের জিডিপিতে রপ্তানির পরিমান $৩০৮.৩ বিলিয়ন অথবা ৫৮.২%।
সুইজারল্যান্ডের প্রধান ইন্ডাস্ট্রি হল যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক, টেক্সটাইল, নির্ভুলতা যন্ত্রপাতি এবং ঘড়ি। শেষেরটা দেখে হেসে থাকলে জেনে রাখুন যে সুইজারল্যান্ডের আউটপুটের ভালো একটা অংশ ঘড়ি দখল করে আছে। 

মনেটারি এবং ফিস্ক্যাল পলিসি

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (SNB) বর্তমানে চেয়ারম্যান থমাস জর্ডান দ্বারা পরিচালিত। তিনি দেশের মনেটারি পলিসি নির্ধারণ করেন। এজন্য তিনি দেশের মনেটারি এবং ক্রেডিট কন্ডিশনের উপর প্রভাব ফেলেন।

গভর্নিং বোর্ড ৩ জন মেম্বার নিয়ে গঠিত যারা ব্যাংকের পলিসি নির্ধারণ করার দায়িত্বে আছেন। তারা হলেন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, এবং আরেকজন মেম্বার।

অন্যান্য সেন্টাল ব্যাংক থেকে ভিন্ন, SNB তাদের ইন্টেরেস্ট রেট (আরেক নাম হল Libor) একটা ৩ মাসে জন্য ফিক্সড রেটের বদলে টার্গেট রেঞ্জের মধ্যে সেট করে থাকে।

দেশের মানি সাপ্লাই এবং ইন্টেরেস্ট রেট নিয়ন্ত্রন বাদেও SNB তাদের কারেন্সি CHF এর ভ্যালু স্থিতিশীল রাখার কাজে লিপ্ত থাকে।

শক্তিশালী CHF ইনফ্লেশন বাড়িয়ে দিতে পারে এবং দেশের রপ্তানিতে পতনসাধন করতে পারে। সুইজারল্যান্ড রপ্তানিনির্ভর দেশ হওয়াতে CHF যে দুর্বল রাখতে SNB ফরেক্স মার্কেটে হস্তক্ষেপ করতে দ্বিধাবোধ করেনা।

SNB এর একটা মুখ্য উদ্দেশ্য হল ইনফ্লেশন কন্ট্রোল করা। তাদের ইনফ্লেশন টার্গেট বছরে ২% এর কম, যেটা সিপিআই এর মাধ্যমে মনিটর করা হয়।

তারা দেশের ইনফ্লেশন রেটে প্রভাব ফেলার জন্য ওপেন মার্কেট অপারেশন এবং Libor রেটে সংশোধন করে।

ওপেন মার্কেট অপারেশনের কথা বলতে গেলে, ব্যাংক Libor রেট short term repurchase (repo) transactions এর মাধ্যমে কন্ট্রোল করে। repo transactions কোন নির্দিষ্ট ক্যাশের বিনিময়ে সিকিউরিটি সেল করা হয় এবং এই শর্ত থাকে যে ভবিষ্যতে এক নির্দিষ্ট তারিখে তারা সেই সিকিউরিটি repurchase করবে।

যদি ওপেন মার্কেটে ইন্টেরেস্ট রেট, SNB এর প্রত্যাশিত রেটের চেয়ে বেড়ে যায়, তাহলে সেন্ট্রাল ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংককে repo অপারেশনের মাধ্যমে কম, repo রেটে বেশী লিকিউডিটি প্রভাইড করবে।

অন্যদিকে, repo রেট বাড়িয়ে SNB লিকুইডিটি কমাতে পারে। আবার তারা Libor রেট বাড়িয়েও একাজ করতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের ফিস্ক্যাল পলিসির একটা আকর্ষণীয় দিক হল, ডেভেলপড দেশগুলোর মধ্যে তাদের ট্যাক্স রেট সবচেয়ে কম। মানুষ আবার সুইজারল্যান্ডকে “ট্যাক্স হ্যাভেন” বলে থাকে।

সুইজারল্যান্ডে কর্পোরেট ট্যাক্স রেট ৮.৫% - ১০% এর মধ্যে। এটা এবং তার সাথে ব্যাংকের গোপনীয়তা রক্ষা করার আইন সুইজারল্যান্ডকে বিশ্বে সেরা বিজনেস ফ্রেন্ডলি দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম করে তুলেছে। 

CHF কে চেনা

খুব বেশীদিন হয়নি যে, বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং লাক্সেমবার্গ তাদের কারেন্সিকে ফ্রাঙ্ক নামে ডাকতো। তারপর তারা ইউরোতে পরিবর্তন করলো। বর্তমানে সুইজারল্যান্ড একমাত্র দেশ যে ফ্রাঙ্ক কারেন্সি হিসেবে ব্যাবহার করছে।

ফিনান্স্যিয়াল গুরুরা সুইস ফ্রাঙ্ককে “সুইসি” বলে ডাকে।

সুইজারল্যান্ডের নিরপেক্ষতা...

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের গোপনীয়তার আইনের কারনে তাদের রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ ধরা হয়। যেটা তাদের “সেফ হ্যাভেন” উপাধিতে ভূষিত করে। সাধারনত, ইকোনোমিক অস্থিরতার সময় ইনভেস্টররা তাদের ফান্ড সুইজারল্যান্ডে সরিয়ে ফেলে, যেটা CHF এর ভ্যালু বৃদ্ধি করে।

সুইস শুধু EU তে যোগ দেয়া প্রত্যাখ্যান করেনি, তারা একমাত্র দেশ যে কিনা গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখেছে।
তাদের দেশের প্রায় ২৫% অর্থ গোল্ড রিজার্ভ আছে। এজন্য CHF আর গোল্ডের প্রাইসে ৮০% এর মত কোরিলেশন দেখা যায়। এর মানে যখনই গোল্ডের প্রাইস বাড়ে, CHF সেটা থেকে ফায়দা পায়।

CHF এর কিছু প্রয়োজনীয় ইকোনোমিক ইনডিকেটর

জিডিপি – জিডিপি দেশের সর্বমোট উৎপাদনকৃত পণ্য এবং সেবার মূল্য পরিমাপ করে। এই রিপোর্ট ইকোনোমিতে বিগত পেরিয়োডের মোট আউটপুটের সাথে বর্তমানের আউটপুটে পরিবর্তন পরিমাপ করে।

রিটেইল সেলস – এটা রিটেইল লেভেল প্রতিমাসে সর্বমোট সেলে কত পরিবর্তন হল সেটা পরিমাপ করে।
কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) – সিপিআই একগুচ্ছ পণ্য ও সেবা একসাথে করে তাতে প্রাইসের পরিবর্তন পরিমাপ করে।

ব্যালেন্স অব ট্রেড – ব্যালেন্স অব ট্রেড দেশে পণ্যদ্রব্যের মোট আমদানি এবং রপ্তানির মধ্যে পার্থক্যের পরিমান দেখায়। সুইজারল্যান্ড এক্সপোর্ট ইন্ডাস্ট্রি অনেক শক্তসামর্থ আর তাই ইকোনোমি কেমন করছে, ট্রেডাররা ট্রেড ব্যালেন্সকে সেজন্য ব্যাবহার করে থাকে।

CHF কে কি মুভ করায় 

গোল্ডের প্রাইস

আগে বলেছিলাম যে CHF এবং গোল্ডের কোরিলেশন প্রায় ৮০% আর সুইজারল্যান্ডের ক্যাশের ২৫% ভাগ গোল্ড রিজার্ভ। যখন গোল্ডের প্রাইস বাড়ে, CHF এর প্রাইস সাধারনত বাড়ে। অন্যদিকে গোল্ডের প্রাইস পড়লে, CHF এর প্রাইসও পড়ে।

ইউএস এবং ইউরো জোনে ডেভেলপমেন্ট

যেহেতু সুইজারল্যান্ড রপ্তানি নির্ভর দেশ, তাদের মেজর ট্রেডিং পার্টনার ইউএস এবং ইউরোজোনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে, তাদের উপর প্রভাব ফেলে। সুইজারল্যান্ডের রপ্তানি পার্টনার হল জার্মানি (২১.২%), ফ্রান্স (৮.২%), ইতালি (৭.৯%), এবং অস্ট্রিয়া (৪.৫%)।

এদিকে সুইজারল্যান্ডের রপ্তানির ৮.৭% ইউএস নেয়। এদের কন একটি দেশে খারাপ ইকোনোমিক পারফর্মেন্স সুইজারল্যান্ডে কম বাণিজ্যিক কার্যকলাপের ইঙ্গিত করে।

Sortin' Out the Rough Edges

প্রতিবেশী ইউরোপে রাজনৈতিক পীড়া দেখা দিলে, বিশেষ করে ইউরোজোনে, সেটা ট্রেডারদের সুইসির শরণাপন্ন করে।
মনে রাখবেন যে ইউরোজোনে ১৭ টি স্টেট যেগুলো ইসিবি পরিচালনা এবং সম্পূর্ণ গ্রুপের জন্য মনেটারি পলিসি নির্ধারণ করে।

যেহেতু মেম্বার দেশগুলো অর্থনীতি ভিন্ন গতিতে চলে, মাঝেমধ্যে ইসিবির পলিসি কোন নির্দিষ্ট সময়ে জেকন এক দেশের বিরুদ্ধে হেতে পারে।

এক্স ফ্যাক্টর

ক্রস কারেন্সির EUR/CHF এর এক্সচেঞ্জ USD/CHF এর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ধরুন, ইসিবির ইন্টেরেস্ট রেট বাড়ানোতে ইউরোর ভ্যালু বাড়লে, সেটা অন্যান্য সুইসি পেয়ারগুলোকে দুর্বল করবে।

মার্জার এবং অ্যাকুইজিশন (M&A) কার্যকলাপ

সুইজারল্যান্ডের প্রধান ইন্ডাস্ট্রি হল ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স। M&A কার্যকলাপ অথবা কোম্পানির কেনা অথবা বেচা খুব কমন।

সেটা CHF এর উপরে কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে?

ধরুন, বিদেশী এক কোম্পানি সুইজারল্যান্ডের একটা বিজনেস কিনতে চায়। তাহলে তাদের CHF এ দাম দিতে হবে। অন্যদিকে ধরুন, কোন সুইজ ব্যাংক ইউএস এর একটা কোম্পানি কিনতে চায়, তাহলে তাদের CHF দিয়ে USD কিনতে হবে।


USD/CHF ট্রেডের কৌশল 

সুইসি পেয়ার (USD/CHF এবং EUR/CHF) সাধারনত ইউরোপিয়ান ট্রেডিং সেশনে একটিভ থাকে। দুটো কারেন্সি পেয়ারই বেশীরভাগ সময় রেঞ্জ বাউন্ড মার্কেটে থাকে। তারপরে আবার তাদের ব্রেকআউট এবং স্পাইক করার সম্ভাবনা থাকে।

আগে বলেছিলাম যে SNB সুইসির ভ্যাল সবসময় মনিটর করে। তারা CHF কে দুর্বল করার লক্ষে ফরেক্স মার্কেটে হস্তক্ষেপ করার জন্য বিখ্যাত।

উদাহরনস্বরূপ, যদি কোন রিস্ক বাড়ার কারনে USD/CHF বাৎসরিক লো অতিক্রম করে, SNB প্রাইস উপরে ওঠানোর জন্য ঘুরপাক খাবে।

চার্টে ২০১১ সালের কাহিনী লক্ষ্য করুন। SNB ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা EUR/CHF এর সর্বনিম্ন ভ্যালু ১.২০০০ বজায় রাখবে। তারপরের বছরগুলোতে প্রাইস কোথায় ঘুরপাক খাচ্ছে?

এছাড়াও আপনি সুইসি ট্রেডের জন্য তাদের মেজর ট্রেডিং পার্টনার ইউরোজোনের ইকোনোমিক ফান্ডামেন্টাল মনিটর করতে পারেন। যেকোনো উত্তেজনাপূর্ণ ইকোনোমিক অথবা পলিটিক্যাল খবর ইউরো জোনের ইনভেস্টরদের সুইসির শরণাপন্ন করে।

তারপর, USD/CHF ট্রেডের জন্য কারেন্সি ক্রস যেমন EUR/CHF ব্যাবহার করা যেতে পারে। ইসিবির ইন্টেরেস্ট রেটে বৃদ্ধি EUR/CHF এর প্রাইস বাড়াবে আর তার সাথে USD/CHF এর উপরও প্রভাব ফেলবে।

Contact Us

নাম

ইমেল *

বার্তা *

সূচীপত্র

ওয়েবসাইটে উপলব্ধ সকল ম্যাটেরিয়াল শেখার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা এবং বিনিয়োগের জন্য উপযোগী নয়।
আপনার সাথে জড়িত প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে কোন লাভ অথবা ক্ষতির ভার পিপকমিউনিটি বহন করবে না।
কপিরাইট © ২০১৭ পিপকমিউনিটি - বাংলা ফরেক্স স্কুল | Bangla Forex School। সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Scroll Up